ডিজিটাল ডেস্ক, ২৫ মে : পর্যটন, বিমান পরিবহণের চেয়েও অটোমোবাইল সেক্টর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে চলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ার আগে থেকেই ধুঁকছিল গাড়িশিল্প। শুরু হয়েছিল কর্মী সংকোচন। সেই সংকট কাটার আগেই দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ। দু’মাসেরও বেশি টানা লকডাউনের জেরে সেই অটোমোবাইল শিল্পে অশনি সংকেত। সূত্রের খবর, বিক্রি নেই, উৎপাদন বন্ধ। ফলে চলছে বিপুল হারে কর্মী ছাঁটাই। শুধুমাত্র হরিয়ানার গুরুগ্রামের অটোমোবাইল হাবেই ২০ থেকে ৩০ লক্ষ মানুষ চাকরি খোয়াতে পারেন বলে আশঙ্কা করছে শিল্পমহল। আর অন্তত ছ’মাসের মধ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা তো নেই-ই, বরং সংকট আরও গভীর হতে চলেছে বলেই আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের বিশেষজ্ঞরা। হরিয়ানার বণিকসভা সিআইআই-এর ‘ইজ অব ডুইং বিজনেস’-এর চেয়ারম্যান হরভজন সিংহের মতে, লকডাউনের ক্ষত এই অটোমোবাইল হাবে আগ্রাসী রূপ নিয়ে ধেয়ে এসেছে। তিনি বলেন, ‘‘অটোমোবাইল শিল্প অন্তত ৫০ শতাংশ সংকুচিত হতে চলেছে। তার প্রভাব অবশ্যই কর্মসংস্থানে পড়বে। সব ‘অরিজিনাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স’ (ওইএম)-এর বিক্রি তলানিতে নেমে গিয়েছে। বিক্রি কমলে উৎপাদনও কমবে। আর উৎপাদন না হলে কর্মীদের উপর কোপ পড়বেই। কারণ কর্মীদের বসিয়ে মাইনে দেওয়া সম্ভব নয়। কর্মী ছাঁটাই হতে পারে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত।’’ আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘চারজন করে এক একটি পরিবার ধরলে সারা দেশে বিপুল সংখ্যক মানুষ সমস্যার সম্মুখীন হবেন।’’ লকডাউনের জন্য কর্মী ছাঁটাই করেছে এমন বহু সংস্থার মধ্যে রয়েছে বেলসোনিকা অটো কমপোনেন্ট ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড। মারুতির অন্যতম ‘ভেন্ডর’ এই সংস্থার ১৩০০ কর্মীর মধ্যে ৩০০ অস্থায়ী কর্মীকে ইতিমধ্যেই ছেঁটে ফেলেছে। বেলসোনিকার মানবসম্পদ বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার রমেশ কুণ্ডু জানান, উৎপাদন ১৫ শতাংশ কমে গিয়েছে। জুলাইয়ে সেটা পৌঁছে যেতে পারে ৪০ শতাংশে। তিনি বলেন, ‘‘লকডাউনের মধ্যে যে বকেয়া হয়েছিল, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে গুরুগ্রামের সব কর্মীকে তা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু উৎপাদন ছাড়া কর্মীদের রাখা কঠিন।’’ রিকো অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’ আবার ১১৯ জন স্থায়ী কর্মীকেও ছেঁটে ফেলেছে। তবে আইনি পথে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই সংস্থার কর্মী সংগঠন।