ডিজিটাল ডেস্ক, ২৭ মে : সরকার ভাঙতে না চাইলেও কেন্দ্র গায়ের জোরে বাংলার ‘সর্বনাশ’ করতে চাইছে বলে ফের তোপ দাগলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ক্ষোভের কারণ হল, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই মহারাষ্ট্র থেকে ঢোকা শুরু করেছে একের পর এক শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন। করোনা কবলিত রাজ্য থেকে একসঙ্গে প্রচুর ট্রেন আসায় সংক্রমণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। আর তাতেই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘‘বুধবার রাতে ১১টা ট্রেন ঢুকছে। কাল সকালে ১৭টা ঢুকবে। বুঝুন, সব ছেড়ে দিয়েছে এক সাথে। ওরা আমাদের পলিটিক্যালি ডিসটার্ব করতে গিয়ে বাংলার সর্বনাশ কেন করছে জানি না। আমাকে যত খুশি ডিসটার্ব করুক। একটা প্ল্যানিং তো করতে টাইম দেবে। এ আবার কী কথা!’’ তাই মোদী ও শাহের প্রতি মমতার আবেদন, ‘‘আমি প্রধানমন্ত্রী ও হোম মিনিস্টারকে বলব, প্লিজ সিরিয়াসলি দেখুন, যাতে করোনা না বাড়ে। সব রাজ্যই আপনাদের রাজ্য, এটা মাথায় রাখতে হবে।’’
সূত্রের খবর, আমফান বিপর্যয়ের মধ্যে ভিনরাজ্য থেকে ফেরা লক্ষ লক্ষ শ্রমিককে কোয়ারেন্টাইনে রাখতে টাস্ক ফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। তবে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ গোপন করেননি তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন ‘‘একদিকে দুর্যোগ, একদিকে করোনা, আর একদিকে একসঙ্গে সব পাঠিয়ে দিচ্ছে। রেল মিনিস্ট্রির কোনও দায়িত্ব নেই? কোনও দায়বদ্ধতা নেই?’’ প্রশ্ন তুলে মমতা জানান, কেন্দ্র রাজনৈতিক মর্জিমতো গায়ের জোরে কাজ করছে। তাতে রাজ্যের বিপদ বাড়ছে।
মমতার কথায়, ‘‘এত বড় দুর্যোগ। দুর্যোগ সামলাব, না কেন্দ্রের চাপিয়ে দেওয়া রাজনীতি সামলাব?’’ দিল্লির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে মমতা আরও বলেন, ‘‘সব কিছু টু মাচ করছেন আপনারা। এত লক্ষ লক্ষ লোককে কোয়ারেন্টাইন করার মেশিনারি আমার কোথায়? কেন্দ্রীয় সরকারেরও কি এত লোককে কোয়ারেন্টাইন করার পরিকাঠামো রয়েছে?’’ এর পরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি যদি না পারি, সেন্টার নিজে টেক কেয়ার করুক না এই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলোকে। আমি তো বলেছিলাম অমিত শাহকে, এত টিম পাঠাচ্ছেন, পাঠান। কিন্তু আপনার যদি মনে হয় ওয়েস্ট বেঙ্গল গভর্নমেন্ট পারছে না, তা হলে আপনি নিজে টেক কেয়ার করুন না। আপনি নিজে করোনাকে সামলান, আমার কোনও আপত্তি নেই। তখন তিনি আমাকে বলেছিলেন, নেহি নেহি, কুছ নেহি হুয়া, গভর্নমেন্টকো হম ক্যায়সে তোড় সকতা হ্যায়।’’ এ জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানালেও বুধবার নবান্নে করোনা নিয়ে রিভিউ মিটিংয়ে কেন্দ্রের প্রতি ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী।