ডিজিটাল ডেস্ক, ১৯ এপ্রিল : মহিলাদের সুরক্ষিত রাখার জন্য সম্প্রতি লোকসভায় পাশ হয়েছে দ্য অ্যাসিস্টেড রিপ্রোডাকটিভ টেকনোলজি (রেগুলেশন) বা সহায়ক প্রজনন প্রযুক্তি বিল (এআরটি বিল) এবং সারোগেসি নিয়ন্ত্রক (রেগুলেশন) বিল। এর মাধ্যমে কোনও মহিলার দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে বা নিজে বাচ্চা নেওয়ার ঝক্কি না নেওয়ার কারণে অপর মহিলাকে ব্যবহার করার প্রবণতা কমবে বলে আশা করা যায়। এ বারের নারী দিবসে নারীদের কাছে এটা অনেকটা স্বস্তির খবর বলেই ধরে নেওয়া যায়।
বিলের খসড়ায় কিছু পরিবর্তন চেয়ে আগেই রাজ্যসভায় পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে সংশোধনী নিয়ে বিল পাশ হল। সারোগেসি আইনে দু’টি বোর্ড গঠন করার কথা বলা হয়েছে। একটি জাতীয় সারোগেসি বোর্ড, যা থাকবে কেন্দ্রের অধীনে, অন্যটি থাকবে রাজ্যের অধীনে। এই দু’টি বোর্ডই সারোগেসির সব নিয়মকানুন মেনে হচ্ছে কিনা, তার দেখাশোনা করবে। এই আইন অনুযায়ী সারোগেসি ক্লিনিকগুলিকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। কোনও সমস্যা হলে রেজিস্ট্রেশন বাতিলের ক্ষমতাও থাকছে এই বোর্ডের হাতে। এই আইনে কী কী আছে? উত্তরে বিশিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ইন্দ্রনীল সাহা জানান:
কোনওরকম বাণিজ্যিক কারণে সারোগেসি বা গর্ভ ভাড়া নেওয়া চলবে না।
ভারতীয় সন্তানহীন দম্পতিরাই সারোগেসি করতে পারবেন। বিদেশি তো নয়ই, এমনকী অনাবাসী ভারতীয়রাও এ দেশে তা করাতে পারবেন না।
অন্তত ৫ বছর বিয়ে হওয়া নিঃসন্তান দম্পতিরাই সারোগেসির জন্য আবেদন করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে মহিলার বয়স ২৫- ৫০ ও পুরুষের বয়স ২৬- ৫৫ বছরের মধ্যে হতে হবে।
বন্ধ্যাত্ব প্রমাণের জন্য ডিস্ট্রিক্ট মেডিক্যাল বোর্ডের কাছ থেকে স্বামী-স্ত্রীকে সন্তান ধারণে অক্ষমতার সার্টিফিকেট আনতে হবে।
যিনি সারোগেট মা হবেন, তার প্রেগন্যান্সি থেকে বাচ্চা হওয়ার পরবর্তী ১৬ মাস ইনসিওরেন্সের দায়িত্ব নিতে হবে ওই দম্পতিকে।
আগে এক সন্তান থাকলে বা দত্তক নিলে সারোগেসি করা চলবে না।
সারোগেসির জন্য শুধুমাত্র নিকট আত্মীয়রই গর্ভ নেওয়া যেতে পারে। এবং সেই মহিলার আগে কোনও সুস্থ সন্তান থাকতে হবে। কোনও অর্থের লেনদেন চলবে না।
একজন মহিলা তার জীবনে একবারই সারোগেসির মাধ্যমে মা হতে পারবেন।
বাচ্চাকে স্বীকার না করলে বা সারোগেসি ক্লিনিক সেন্টারে অনিয়ম হলে কমপক্ষে দশ বছরের জেল ও দশ লক্ষ টাকা জরিমানা হতে পারে।