ডিজিটাল ডেস্ক, ১৫ অগস্ট: দেশে ‘মা-বোনেদের’ উপর অত্যাচার নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার, স্বাধীনতা দিবসের সকালে লালকেল্লায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে মোদী বলেন, “দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মেয়েরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু কিছু উদ্বেগের বিষয়ও রয়েছে। আমি আজ লালকেল্লা থেকে আমার যন্ত্রণার কথা বলতে চাই। তার পরেই তিনি বলেন, “মহিলাদের উপর অত্যাচার নিয়ে আমাদের গুরুত্বের সঙ্গে ভাবনাচিন্তা করা উচিত। এগুলির বিরুদ্ধে গোটা দেশ ক্ষোভ জানাচ্ছে। আমি ক্ষোভের বিষয়টি বুঝতে পারছি। এই দেশ, সমাজ এবং রাজ্য সরকারগুলির গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি দেখা উচিত।”
কোনও নির্দিষ্ট ঘটনার কথা উল্লেখ না করলেও মনে করা হচ্ছে, কলকাতায় আর জি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা এবং তার বিরুদ্ধে নাগরিক সমাজের প্রতিবাদের দিকে ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ইতিমধ্যে রাজ্যের শাসকদল তথা তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশ নাগরিক সমাজের আন্দোলনে সায় দিয়ে রাস্তায় নেমেছে। মোদী তাঁর ভাষণে আরও বলেন–যাঁরা মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত করছেন, তাঁদের দ্রুত এবং কঠোর শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন।
এই নিয়ে টানা ১১ বার স্বাধীনতা দিবসের দিন লালকেল্লা থেকে ভাষণ দিলেন মোদী। ৭৮তম স্বাধীনতা দিবসের সন্ধিক্ষণে রাতের রাজপথ মেয়েদের দখলে চলে যায়। কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি জেগে ওঠে মিছিলে, স্লোগানে আর শঙ্খধ্বনিতে। কারও-র হাতে ছিল মোমবাতি, কারও-র হাতে মশাল। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তনীর ডাকে, নারী-নির্যাতনের প্রতিবাদে দল-মত নির্বিশেষে গোটা বাংলার সঙ্গে অন্যান্য রাজ্য-ও এমনকী বিদেশের নানা প্রান্ত দুষ্কৃতীরাজের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে কর্তব্যরত এক চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ এবং খুনের এই প্রতিবাদ কর্মসূচি চলাকালীন বুধবার মধ্যরাতে সেই আর জি করেই হামলা চালানো হয়। ভাঙচুর করা হয় আর জি করের পুলিশ ফাঁড়িতেও। পাশাপাশি পুলিশের কিয়স্কেও চলে ভাঙচুর। নামানো হয় র্যাফ। তারা কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে ভিড়কে ছত্রভঙ্গ করে। সেইসময়ে এলাকা জুড়ে চলে ইটবৃষ্টি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। সিপি বলেন, ‘‘ডিসি নর্থ প্রতিবাদকারীদের রক্ষা করতে গিয়ে গুরুতর জখম হয়েছেন। তিনি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছেন। এখানে যা হয়েছে তা ভুল প্রচারের জন্য। কলকাতা পুলিশ এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত।’’ ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন তৃণমূল সাংসদ তথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি–২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশকে ‘অপরাধী’দের খুঁজে বের করতে হবে। আর আর জি করে হামলার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নিশানা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারি। তাঁর পাল্টা দাবি–মুখ্যমন্ত্রী-ই মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনকে দমাতে গুন্ডা পাঠিয়েছেন।