কীভাবে তৈরি হবেন নিজের বিশেষ দিনের জন্য। রইল তার কিছু স্পেশাল টিপস। জানাচ্ছেন সুচেতনা বন্দ্যোপাধ্যায়
আজকাল কর্মরতা মহিলাদের অনেকেই বিয়ে ঠিক হওয়ার পর নিজের রূপচর্চার কথা ভাবেন। তাঁদের ধারণা, বিয়ের কয়েকদিন আগে থেকে নিয়ম করে পার্লারে গিয়ে ট্যান রিমুভ বা ফেসিয়াল যথেষ্ট। তাতেই বিশেষ দিনে নিজেকে সবার সামনে অপরূপা হিসাবে তুলে ধরা যাবে। এ ধারণা একেবারেই ভুল। কারণ ত্বক সুন্দর করে তোলা সময়সাপেক্ষ কাজ। কাজেই বিয়ের সাজে নিজের সেরা লুক তুলে ধরার জন্য বেশ কিছুদিন আগে থেকে পরিকল্পনা করে ধাপে ধাপে এগতে হবে।
অনেকেই পার্লারের বিজ্ঞাপন ও আকর্ষণীয় প্যাকেজের মোহে নিজেকে রাতারাতি সুন্দর করে তোলার স্বপ্ন দেখেন। এ সবে মুগ্ধ হয়ে ত্বক নিয়ে কোনও পরীক্ষ-নিরীক্ষা না করাই ভালো। কারণ কোনও নিয়মেই ত্বক ঝটপট ঝকঝকে হতে পারে না। বরং উলটোটা হতে পারে।
বিউটিশিয়ানরা তাঁদের ক্লায়েন্টকে ধরে রাখার জন্য ত্বক সুন্দর করার জন্য নানারকম পরামর্শ দিতে পারেন। কেউ বলেন, কেমিক্যাল পিলিং করা ভালো। তো কেউ বলবেন অ্যাকনে ব্লু লাইট থেরাপিই সেরা। যদিও অনেক সময়েই তাঁরা এ সব অবৈজ্ঞানিকভাবে করে থাকেন। যার জন্য ত্বকে স্থায়ীভাবে সমস্যা তৈরি হতে পারে। আর একান্তই কেমিক্যাল পিলিং করাতে হলে ডিপ পিলিং করানো উচিত নয়। হালকা মানে ওপর ওপর করা যেতে পারে। তবে সবচেয়ে ভাল হয় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এ কাজ করলে।
প্রত্যেকের নিজের ত্বক কেমন অর্থাৎ তা তৈলাক্ত, নাকি শুকনো ধরনের সে সম্পর্কে জেনে রাখা দরকার। পার্লারে ফেসিয়াল করানোর সময় বিউটিশিয়ানকে সে সম্পর্কে জানিয়ে দেওয়া দরকার। এতে উপযুক্ত উপকরণ বাছতে তাঁদের সুবিধা হবে। নিজের ব্রণ হওয়ার প্রবণতা থাকলে পার্লারে ফেসিয়াল না করাই ভালো। এতে সমস্যা বাড়তে পারে।
আজকাল ত্বক সুন্দর করার অনেক পদ্ধতি এখন বেশ চলছে। অনেক ক্ষেত্রে তা স্থায়ীভাবে কাজ করে। যেমন, ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ত্বক ভালো করার জন্য দরকারি ভিটামিন ত্বকে ঢোকানো হয়। আবার লেজার দিয়েও ত্বকের বাদামি ছোপ, গালের গর্ত ও বলিরেখার সমাধান করা হয়। তবে এ সব চিকিৎসা করানোর আগে সে সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া দরকার।
আবার এ-ও ঠিক যে, ত্বকের যে কোনও চিকিৎসা করানোর পরে তার ফল পেতে কয়েকদিন সময় লাগে। আজ করলেই কাল সুফল মিলবে, এমন ভাবা অর্থহীন। তবে এতে হতাশ হয়ে পড়া ঠিক নয়। আর একই কারণে বিয়ের এক-দু’দিন আগে এ ধরনের চিকিৎসা করালে আদৌ তার কোনো প্রভাব নজরে আসে না।
মুখের অবাঞ্ছিত রোম তোলার জন্য এখন লেজার পদ্ধতি খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ ক্ষেত্রেও মনে রাখতে হবে, অন্তত ছ’টা সিটিঙের আগে এর তেমন কোনও প্রভাব পড়ে না। কাজেই এই চিকিৎসা করাতে হলে অন্তত ছ’মাস আগে শুরু করতে হবে।
সাবধানতা- এক সমীক্ষায় জানা গেছে, পার্লারে ফেসিয়াল করার পর সাতচল্লিশ শতাংশ ক্ষেত্রে সাত থেকে একুশ দিনের মাথায় ব্রণর উপদ্রব শুরু হয়। কারণ, ফেসিয়াল করার সময় যে সব রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, তার সাইড এফেক্টস হিসাবে ত্বকে ওই সমস্যা হয়। আর বেশিরভাগ সময়ে বিউটিশিয়ানরা নিজেরাও জানেন না, কার কোন প্রোডাক্টে কী ক্ষতি হতে পারে। আর ওয়াক্সিং করতে হলে অন্তত ছ’দিন আগে করা দরকার। কারণ এর জন্য ত্বকে ফোলা ও লালভাব দেখা দিতে পারে।