চকোলেট খেতে ভালোবাসেন না এমন মানুষ খুব কমই আছে। তবে স্বাস্থ্যসচেতনতার কারণে এখন অনেকেই ভালবাসার খাদ্যটিকে অনেক সময়ে বয়কট করতে বাধ্য হন। যদিও চিকিৎসকরা বলছেন, চকোলেট খান, কোনও ক্ষতি নেই। তবে তা হোক ডার্ক চকোলেট। খেতে একটু তিতকুটে হলেও গুণ যথেষ্ট। শুনবেন কী কী উপকার পেতে পারেন ডার্ক চকোলেট থেকে? তা হলে শুনুন।
কয়েকদিন আগেই বিশ্বজুড়ে পালন করা হল চকোলেট ডে। জন্মদিন হোক, বিবাহ বার্ষিকী, ভ্যালেনটাইন্স ডে বা চকোলেট ডে–যে কোনও অনুষ্ঠানেই আমরা চকোলেট উপহার দিতে বা পেতে খুবই পছন্দ করি। এখন প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন নামের স্বাদের চকোলেট আসছে বাজারে। চকোলেট কখনও হয়ে যাচ্ছে খানিক তেতো, কখনও তাতে মেশানো হচ্ছে কাজু, কিশমিশ বা বাদাম। তেতো চকোলেটের পোশাকি নাম ডার্ক চকোলেট। এতে কোকোর মাত্রা বেশি থাকার কারণে জিভে দিলেই টের পাওয়া যায় যে, এ পুরনো চেনা ক্যাডবেরি বা চকোলেট নয়। তবে চকোলেট যত বেশি কালো ততই ভাল। তাই কেনার সময় সুন্দর ফুটফুটে সাদা না কিনে বেশ কালো রঙের অর্থাৎ ডার্ক চকোলেট কিনুন। কারণ এর প্রচুর উপকারী দিক আছে। এ কারণে ইওরোপে এক সময়ে ডার্ক চকোলেট ওষুধ হিসাবে ব্যবহারের চল ছিল।
ডার্ক চকোলেটে থাকে বিভিন্নরকম মিনারেলস। যেমন আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, ফসফরাস, ভিটামিন-এ, বি-১, সি ইত্যাদি। যা আমাদের শরীরের সুস্থতার জন্য খুব জরুরি। ডার্ক চকোলেটে থাকা কোকোর মধ্যে আছে ফ্লেভানয়েডস ও পলিফেনলস নামে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান । এই সব উপাদান শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে অসুখের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। এর ফলে ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে থাকে। ত্বকও আর্দ্র থাকে। বাজারচলতি মিল্ক চকোলেটে বাটার, চিনি প্রচুর পরিমাণে থাকলেও খুব কম পরিমাণ কোকো থাকে। ফলে তা শরীরের তেমন কোনও উপকারে আসে না। কিন্তু ডার্ক চকোলেটে চিনি কম থাকে। বেশি থাকে কোকো। ফলে কোকোর উপকারিতা পাওয়া যায়। এ কারণেই স্বাস্থ্য সচেতন লোকেদের কাছে এখন ডার্ক চকোলেটের চাহিদা তুঙ্গে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডার্ক চকোলেট খাওয়ার পর মস্তিষ্কে এনডরফিন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যায়। যার ফলে মানসিক অবসাদ ও স্ট্রেস কমে গিয়ে মন হয়ে ওঠে হাসিখুশি ও চনমনে। এ ছাড়া আলঝাইমারের মতো অসুখ থেকেও দূরে থাকা যায়। তা ছাড়া ডার্ক চকোলেটের পলিফেনল ও থিওব্রোমিন নামে উপাদান লো ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন বা খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। আবার এর ফ্ল্যাভানয়েডস নামে উপাদান ত্বক বলিরেখামুক্ত রাখতেও সাহায্য করে। আর মিল্ক চকোলেট খেলে দাঁতের এনামেল ক্ষয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কিন্তু ডার্ক চকোলেটে সে ভয় থাকে না। শুধু তাই নয়, দাঁতের এনামেল ধরে রাখতেও সাহায্য করে ডার্ক চকোলেট।
তবে কোনও কিছুই তো অতিরিক্ত ভালো নয়। তাই চিকিৎসকরা বলছেন, প্রতিদিন ডার্ক চকোলেট খেলেও তার পরিমাণ যেন ৩০ থেকে ৬০ গ্রামের বেশি না হয়। এর বেশি খেলে শরীরে বাড়তি ক্যালোরি যাবে, যা লাভের পরিবর্তে ক্ষতিই ডেকে আনবে।