কোনও দুর্ঘটনার পর গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। চলে দোষারোপের পালা। কিন্তু ট্রেনযাত্রীদের সুরক্ষা সেই তিমিরেই থেকেই যায়। তাই বালেশ্বরের দুর্ঘটনা থেকে রেলদফতর কী শিক্ষা নেবে, তা ভবিষ্যৎ বলবে।
ইতিমধ্যে, শুক্রবার সন্ধ্যায় ওড়িশার বালেশ্বরে আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় নিহত এবং আহতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। শনিবার রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছন সকাল ৮টা নাগাদ। তার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই সকাল ৯টায় রেলের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয় এ দিন সকাল পর্যন্ত এই দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন ২৩৮ জন। আহতের সংখ্যা ৬৫০। এই সংখ্যা কোথায় গিয়ে থামবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারবর্গকে এককালীন ১০ লক্ষ টাকা, গুরুতর আহতদের ২ লক্ষ টাকা এবং অল্প আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু যে ভাবে পর পর তিনটি ট্রেন দুর্ঘটনার মুখে পড়ল, তার দায় কার, তা বিভাগীয় তদন্তে উঠে আসা উচিত। তার আগে ঘটনার পর্যালোচনা করতে, ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করতে আসছেন ‘দুঃখিত’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পশ্চিমবঙ্গ থেকে উড়ে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এসেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে উদ্ধারকাজ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই অভিশপ্ত লাইন দিয়ে ফের ট্রেন চলাচল শুরু হবে। ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে যাবে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার ছবি।
ভারতীয় রেলের ইতিহাসে একাধিক রেলদুর্ঘটনা হয়েছে। প্রাণহানি হয়েছে প্রচুর মানুষের। গত বছরের ১৩ জানুয়ারি জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির দোমহনিতে দুর্ঘটনায় পড়ে আপ বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস। লাইনচ্যুত হয় মোট ৮টি কামরা। ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় ৯ যাত্রীর। ময়নাগুড়িতে গিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী। উচ্চপর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছিল। তখনই শুরু হয়েছিল অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ‘কবচ’-এর মাধ্যমে ওই ধরনের দুর্ঘটনা রুখে দেওয়ার চিন্তাভাবনা। তার কয়েক মাস পরেই ভারতীয় রেল জানিয়ে দেয় ‘প্রযুক্তি তৈরি’। দেশের ৩ হাজার কিলোমিটার রেলপথে পর্যায়ক্রমে ওই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। কিন্তু শুক্রবার ওড়িশার বালেশ্বরের কাছে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা ‘কবচ’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে!