ডিজিটাল ডেস্ক, ১৪ জুলাই : মহাজগতের বয়স বলা হয় ১৩৮০ কোটি বছর। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপে মহাশূন্যের ১৩৫০ কোটি বছর আগের বিরল ছবি ধরা পড়েছে। এই ছবিতে তারামণ্ডলী ও ছায়াপথের যে আলোকরশ্মির বিচ্ছুরণ দেখা গিয়েছে, তা শত শত কোটি বছর পাড়ি দিয়ে বিশ্বের দরবারে এসে এসে পৌঁছেছে। নাসার তরফে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে সেই ছবি দেখানো হয়েছে। এটাই মহাজগতের প্রাচীনতম অবস্থার সবচেয়ে বিস্তারিতভাবে তোলা চিত্র। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ দিয়ে তোলা আরও ছবি, যেগুলো আগে কখনও দেখা যায়নি, সেগুলো নাসা বিশ্বব্যাপী প্রকাশ করতে চলেছে।
সূত্রের খবর, এক হাজার কোটি ডলার মূল্যের এই জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল গত বছর ২৫ ডিসেম্বর। মহাকাশে সুপরিচিত হাবল টেলিস্কোপের জায়গা নিতে তৈরি করা হয় এই জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। এই টেলিস্কোপ বা দূরবীক্ষণ যন্ত্র আকাশে অনেক কিছুই পর্যবেক্ষণ করবে। তবে এর প্রধান দু’টি লক্ষ্য রয়েছে। একটি হল, মহাকাশে ১৩৫০ কোটি বছর আগে একেবারে প্রথম জন্ম নেওয়া তারাগুলোর আলোর বিচ্ছুরণ কীভাবে ঘটেছিল, তার ছবি নেওয়া, আর দ্বিতীয়টি হল দূরের গ্রহগুলো মানুষের বাসযোগ্য কিনা, সে বিষয়ে অনুসন্ধান করা। জেমস ওয়েবের যে ছবিটি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কাছে নাসা প্রকাশ করেছে, তাতে দেখানো হয়েছে এই দূরবীক্ষণ যন্ত্র প্রথম লক্ষ্যটি অর্জনে সক্ষম।
এই টেলিস্কোপ বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপ। এতে ৬.৫ মিটার চওড়া সোনার প্রলেপ লাগানো প্রতিফলক আয়না আছে আর আছে অতি সংবেদনশীল ইনফ্রারেড তরঙ্গ দৈর্ঘের যন্ত্রপাতি। এই টেলিস্কোপ ছায়াপথের বেঁকে যাওয়া আকৃতির ছবি ধরতে সক্ষম হয়েছে। বিগ ব্যাং বা মহা বিস্ফোরণের পর এই ছায়াপথগুলো স্থায়ী হয়েছিল মাত্র ৬০ কোটি বছর পর্যন্ত। ছবিটিতে দক্ষিণ গোলার্ধের একগুচ্ছ ছায়াপথ দৃশ্যমান। যেটি ভোলান্স নক্ষত্রপুঞ্জ। তার নাম দেওয়া হয়েছে এসএমএসিএস ০৭২৩। এই নক্ষত্রপুঞ্জ সত্যি কথা বলতে খুব একটা দূরে নয়– প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি আলোক বর্ষ দূরে। এর আলোর বিচ্ছুরণ অনেক ব্যাপক পরিসরে, অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে। এটা মাধ্যাকর্ষণের একটা প্রভাব।