ডিজিটাল ডেস্ক, ২৩ নভেম্বর: সামনেই লোকসভা ভোট। ফলে ক্রিকেট বিশ্বকাপও এখন রাজনীতির ময়দানে। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালে ভারতের হারের জন্য নাম না করে এ বারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে দায়ী করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে লোকসভা ভোটের প্রস্তুতিতে তৃণমূলের সমাবেশে মমতা বলেন, ‘‘ইন্ডিয়ান ক্রিকেটাররা এত ভাল খেলল, সব খেলায় জিতল। আর ‘পাপিষ্ঠ’রা যেখানে গেল সেখানে ভরাডুবি হল। বলে না, অতি চালাকের গলায় দড়ি।’’ গত মঙ্গলবার রাজস্থানের জালোরে জনসভা থেকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারতের পরাজয়ের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। বলেন, ‘‘ভাল খেলছিল আমাদের ছেলেরা। বিশ্বকাপ জিতে যেত ওরা। কিন্তু ‘অপয়া’ এসে হারিয়ে দিল।’’ মুখে নাম নিলেও রাহুল আদতে মোদী-শাহকেই নিশানা করেছিলেন বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। কংগ্রেস সাংসদের এই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। বৃহস্পতিবার রাহুলের সুরেই মমতা বিশ্বকাপে ক্রিকেটের ফাইনালে ভারতের হারের জন্য নাম না করে সেই মোদী-শাহকেই কটাক্ষ করেন। পাশাপাশি মমতা বলেন–ফেডারেশনগুলো নিয়ে নিয়েছে রাজনৈতিক দলের লোকেরা। ফুটবলেও পরিয়ে দিয়েছে গেরুয়া। ক্রিকেটেও গেরুয়া। কবাডিতেও গেরুয়া। বাথরুমেও গেরুয়া। মেট্রোতেও গেরুয়া। স্টেশনেও গেরুয়া। যেন মনে হচ্ছে টাকাটা ওদের পার্টি থেকে এসেছে।
এ দিন সভা থেকে দলীয় নেতৃত্বকে এইএসএফের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন তৃণমূলনেত্রী। নাম না করে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন ভাঙড়ের বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকিকে। সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূলের সর্বভারতীয় নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা ঘোষণা করেছেন নওসাদ সিদ্দিকি। এরমধ্যে নওসাদকে সমর্থন জানিয়েছে বাম ও কংগ্রেস। আইএসএফ বিধায়ককে নিয়ে সুর নরম বিজেপিরও। তার পরই সরগরম হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
আগামী লোকসভা ভোটের আগে হাতে মাত্র সাড়ে তিন মাস সময় আছে। তাই কোনও সময় নষ্ট করতে চায় না তৃণমূল। ভোটের আগে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তৃণমূলের অন্যতম হাতিয়ার, ১০০ দিনের কাজের বকেয়া আদায়। এ নিয়ে নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি রাজ্যের বকেয় আদায়ে তিনি দলের সব সাংসদদের নিয়ে দিল্লি যাবেন বলে জানান। সেইসঙ্গে দলাদলি ছেড়ে একজোট হয়ে দলের কর্মীদের কাজের নির্দেশ দেন নেত্রী। তোপ দেগে বিজেপির বিরুদ্ধে মমতার হুঁশিয়ারি, ‘‘আমাদের ৪ জনকে জেলে ঢুকিয়েছে, আমি ৮ জনকে ঢোকাব। যাদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আছে প্রত্যেককে জেলে ঢোকাব।’’ মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি সম্পর্কে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারি বলেন, ‘‘এই কথার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর হওয়া উচিত। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম পড়ে হেয়ার স্ট্রিট থানা এলাকায়। আমি সেখানে গিয়ে মমতার বিরুদ্ধে এফআইআর করব।’’