ডিজিটাল ডেস্ক, ২৫ জুলাই : ২১শের শহিদ সমাবেশের মঞ্চ থেকে বিরোধীদের তুলোধোনা করার পর এ বার বঙ্গ-সম্মান প্রদানের মঞ্চ থেকে বিরোধীদের হুঁশিয়ারি দিলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের পর প্রথম বার মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বলেন, ‘‘হুমকির কাছে মাথা নত করব না। আর যদি কেউ অন্যায় করে থাকে, তার দায়িত্ব সে নিজে নেবে। সরকার এর সঙ্গে যুক্ত নয়। ওই মহিলা দলের কেউ নন। কিছু মিডিয়া নিজের মতো দেখিয়ে যাচ্ছে। পার্থকে কেন ভুবনেশ্বর এমসে নিয়ে যাওয়া হল? আমার লজ্জা লাগছে, বাংলায় এত ভাল ভাল হাসপাতাল থাকতেও পার্থকে ভুবনেশ্বর এমসে নিয়ে যাওয়া হল! কেন্দ্রের ছোঁয়া আছে বলে?’’ ইতিমধ্যে ভুবনেশ্বর এমসের তরফে জানানো হয়েছে, সেখানে ভরতি নেওয়ার মতো তেমন কোনও গুরুতর শারীরিক সমস্যা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নেই। ফলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তবে কলকাতায় এসএসকেএমে মন্ত্রীর যে চিকিৎসা হয়েছে, তা নিয়ে কিছু বলতে নারাজ এমসের চিকিৎসকরা।
নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী তথা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে শনিবার সকালে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) গ্রেফতার করে। পাশাপাশি মন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কেও ইডি গ্রেফতার করেছে। তাঁর দক্ষিণ কলকাতার ফ্ল্যাট থেকে ২১.২০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধার হওয়া টাকার বেশিরভাগটাই সরকারি খামে ছিল বলে ইডির দাবি। নগদ কোটি কোটি টাকা ছাড়াও শুক্রবারের তল্লাশিতে ওই ফ্ল্যাট থেকে মিলেছে ৫৬ লাখ টাকা মূল্যের বিদেশি মুদ্রা, ৭৯ লাখ টাকা মূল্যের সোনার গয়না, ৮টি স্থাবর সম্পত্তির দলিল।
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি চাই, সত্য সামনে আসুক। সত্য প্রমাণ হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিন। আমার কোনও আপত্তি নেই। তবে আমার ছবির সঙ্গে টাকার পাহাড়ের ছবি দিয়ে কুৎসা রটাচ্ছে বিরোধীরা। কয়েকটি রাজনৈতিক দলের আচরণে আমি সত্যিই দুঃখিত। আমি পুজোয় যাই। অর্গানাইজাররা যদি কাউকে স্টেজে আগে থেকে ডেকে রাখে, তাতে আমি কী করতে পারি। তার মানে আমি পুজো প্যান্ডেলে যাব না? যদি কেউ চোর হয়, ডাকাত হয়, তৃণমূল রেয়াত করবে না। কিন্তু অযথা আমার গায়ে কালি ছেটানো হলে আমি ছেড়ে কথা বলব না। আমার হাতেও আলকাতরা রয়েছে।’’ বঙ্গ-সম্মান প্রদান অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবি নিয়ে তোপ দেগেছেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারি। তিনি বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে এই প্রথম তৃণমূল নেত্রী ভয় পেয়েছেন। উনি বুঝে গিয়েছেন দুর্নীতির পর্দা ফাঁসের পর বাংলায় আর মাথা উঁচু করে মানুষের সামনে যাওয়া সম্ভব নয়।’’