ডিজিটাল ডেস্ক, ২২ জানুয়ারি: অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। সোমবার অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানান– রামের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। আমাদের বিচারবিভাগ বিচার সুনিশ্চিত করেছে। তাই আইন মেনেই তৈরি হয়েছে মন্দির। এ দিন ‘অভিজিৎ মুহূর্তে’ মোদীর হাতে রামলালার ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ হয়। এ দিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন উত্তর প্রদেশের প্রধানমন্ত্রী যোগী আদিত্য নাথ, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভাগবত, উত্তর প্রদেশের রাজ্যপাল আনন্দীবেন পটেলও। পঞ্চপ্রদীপে রামলালার আরতি করেন প্রধানমন্ত্রী। বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ সম্পন্ন হয়। মন্দির উদ্বোধনের পর জনসভায় মোদী রামকে বিবাদ নয়, সমাধান বলে উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রামমন্দির শুধু মন্দির নয়, ভারতের দর্শনও।” সেইসঙ্গে মোদীর সংযোজন– ২২ জানুয়ারি শুধু কোনও তারিখ নয়, নতুন কালের শুরু।
রামমন্দির উদ্বোধনের আগে ১১ দিনের ‘কঠিন ব্রত’ পালন করার কথা জানিয়েছিলেন মোদী। সোমবার রামলালার ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ হওয়ার পর চরণামৃত সেবন করিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্রত ভাঙেন শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের গোবিন্দদেব গিরি মহারাজ। রাজনৈতিক মহলের মতে, এ যেন মোদীর কাছে বিরোধীদের টক্কর দেওয়ার ব্রত। কারণ, সামনেই লোকসভা ভোট। সেই ভোটকে পাখির চোখ করে গেরুয়া শিবির প্রধানমন্ত্রীকেই প্রধান পুরোহিত করে রামলালার ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ করল। তাতে তারা ‘ইন্ডিয়া’ জোটের পালের হাওয়া কতটা কেড়ে নিল, তা অবশ্য সময় বলবে। তবে রামমন্দির উদ্বোধনকে ঘিরে সরজূ নদীর তট মিনি ইন্ডিয়ায় পরিণত হয়। গোটা দেশের রামভক্তরা এ দিন অযোধ্যায় এসে ভিড় করেন। গোটা আযোধ্যা আলোর মালায় সেজে ওঠে। অকাল হোলিতে মেতে ওঠে অযোধ্যাবাসী। পাশাপাশি এ দিন কলকাতায় পার্ক সার্কাসে তৃণমূলের ‘সংহতি মিছিল’ শেষে বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে নারীবিরোধী বলে আক্রমণ করেন। মমতার কথায়– আমি রামের বিরুদ্ধে নই। আমি রাম–সীতা দু’জনকেই শ্রদ্ধা করি। তোমরা তো সীতাদেবীর নামটা একবারও বলো না। তার মানে কি নারীবিরোধী? সীতা না থাকলে রাম হয় না। আর কৌশল্যাদেবী না থাকলে রামের জন্ম হয় না। রামের সঙ্গে যিনি বনবাসে গিয়েছিলেন তিনি সীতাদেবী। এ দিন মমতা জানিয়ে দেন–লড়াই সবে শুরু হয়েছে। সম্প্রীতির জন্য লড়াই। আমরা সবাই একজোট হয়ে থাকব। শান্তিপূর্ণভাবে থাকব। আমরা দাঙ্গা করব না। বাংলায় সব ধর্মের মানুষ মিলে মিশে থাকব।