ডিজিটাল ডেস্ক, ২৬ জানুয়ারি: এপাং ওপাং ঝপাং…। শিশুদের মনের কথা ভেবে তিনি যা লিখেছেন, তা ‘কবিতা’ হয়েছে কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক আগেও হয়েছে, এ বার সেই বিতর্ক ফের উসকে দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তা নিয়ে সরব হয়েছেন চিকিৎসক শান্তনু সেন। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ। কাজেই তাঁর সরর হওয়াটা-ই স্বাভাবিক। কারণ, কবিতাটি লিখেছেন তাঁর-ই দলেরই নেত্রী তথা বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর লেখা কবিতার বই নিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় শুধু কটাক্ষ-ই করেননি, রাজ্যের সাহায্যপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারে রাখা কিছু বইয়ের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
বুধবার খিদিরপুরে মাইকেল মধুসূদন লাইব্রেরির একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানেই সরকারি গ্রন্থাগারের অবস্থা নিয়ে মুখ খোলেন। তিনি বলেন–‘কবিতার প্রথম লাইন– এপাং ওপাং ঝপাং, আমরা সবাই ড্যাং ড্যাং। এই যদি কবিতার বই হয়, কেউ পড়বে? আমার মনে হয় কেউ পড়বে না।’ বিচারপতি অবশ্য এ দিন লেখিকার নাম মুখে আনেননি। তবে মুখ্যমন্ত্রী নিজের লেখা কবিতা প্রসঙ্গে এর আগে বলেছিলেন–ভাল চিন্তা মানুষকে বিকশিত করে। তাই তিনি পাঠকদের ভাবতে বলেন। মমতার কথায়, ‘‘আপনি যখন বাচ্চার জন্য কিছু করবেন, তখন আপনাকে প্রথমে বাচ্চা সাজতে হবে। মনটা হতে হবে বাচ্চার মতো।’’
মুখ্যমন্ত্রী যাই বলুন না কেন, বিচারপতির আবেদন–অখাদ্য জিনিষগুলো গ্রন্থাগারে রাখবেন না, এটা আজ বলার সময় এসেছে। তাই তিনি বলেন, ‘‘আমাকে মার্জনা করবেন এইসব শব্দ ব্যবহারের জন্য। যে এত অখাদ্য পুস্তক বিভিন্ন লাইব্রেরিতে সরবরাহ করা হচ্ছে, তা পড়তে কোনও মনুষ্য সন্তান সেখানে যাবে না। আসলে এইসব বই কিনলে তবেই সাহায্য পাওয়া যায়, না হলে পাওয়া যায় না। এই ধরনের বই সরবরাহ হলে, উইপোকা ছাড়া কারও সুবিধা হবে না।’’ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এ হেন মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। তিনি বলেছেন, ‘এটাই প্রমাণ হচ্ছে যে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কাজ করেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে। এজলাসে বসে তৃণমূলের মুখপাত্রের সমালোচনা, দলের লাইসেন্স বাতিল-সহ নানা বিষয়ে কথা বলেন উনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিল্পসত্তা নিয়ে সমালোচনা আসলে পক্ষপাতিত্বের উদাহরণ।’ উল্লেখ্য, সাহিত্য জগতে বিশেষ অবদান, সাহিত্য সাধনার জন্য ‘সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার’ পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘কবিতা বিতান’ কাব্যগ্রন্থের জন্য পুরস্কৃত হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।