ডিজিটাল ডেস্ক, ৮ জানুয়ারি : একের পর এলাকায় ভাঙনের ছবি। প্রায় ৫০০ বাড়িতে ফাটল। যোশীমঠের সর্বত্র এখন কেবল আতঙ্কের ছায়া। ২ এবং ৩ জানুয়ারি–নতুন বছরের এই দুই রাত ভুলতে পারছেন না ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয়রা বলছেন, যোশীমঠ ক্রমেই ধসে যাচ্ছে। একের পর এক নির্মাণ আর আবহাওয়ার পরিবর্তন এই ভয়াবহ বিপর্যয়ের জন্য দায়ী। তা হলে কি এ বার উত্তরাখণ্ডের মানচিত্র থেকে মুছে যাবে দেবভূমি যোশীমঠ, এই প্রশ্ন-ই এখন কেন্দ্রীয় সরকারকে ভারিয়ে তুলেছে।
উত্তরখণ্ড সরকার ইতিমধ্যেই ৯টি ওয়ার্ডকে দুর্যোগ কবলিত এলাকা বলে ঘোষণা করেছে। একের পর এক বাড়িতে ফাটল দেখা দেওয়ায় আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে এসেছেন। কনকনে ঠান্ডায় তাঁরা রীতিমতো দিশাহারা। রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সচিব রঞ্জিতকুমার সিংহ জানিয়েছেন, ২০০৫ সালের বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের ২৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী, জোশীমঠ পৌর অঞ্চলের সব এলাকাকেই ‘বিপর্যস্ত’ তকমা দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিশেষজ্ঞদের একটি দল বিপর্যস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন। তাঁদের দেওয়া প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, আরও বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে ওই অঞ্চলে। তাই তড়িঘড়ি ওখান থেকে সব বাসিন্দাকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র তীর্থক্ষেত্র বদ্রীনাথের প্রবেশপথ জোশীমঠকে বাঁচাতে উদ্যোগী হয়েছে। উত্তরাখণ্ড সরকার যখন জোশীমঠকে বাসের অযোগ্য বলে ঘোষণা করে দিয়েছে, তখন কেন্দ্রের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে ৭ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ দল তৈরি করা হয়েছে। এই দলের কাজ হবে জোশীমঠের পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখে কেন্দ্রকে জানাবে যে, পাহাড়ি এই জনপদকে আদৌ বাঁচানো যাবে কিনা। কেন্দ্রের তৈরি এই দলে রয়েছে এনডিএমএ-র বিশেষজ্ঞ, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থা (এনআইডিএম)-র প্রতিনিধি, এ ছাড়া ভারতীয় ভূতত্ত্ব নিরীক্ষণ সংস্থা (জিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া), রুরকি আইআইটি-র বিশেষজ্ঞ, হিমালয়ের ভূতত্ত্ব সংক্রান্ত ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞ, ভারতের জলবিদ্যা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হাইড্রোলজি)-এর প্রতিনিধি এবং কেন্দ্রীয় নির্মাণ সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞরা।