বিশেষ সংবাদদাতা, ৩১ অগস্ট : যে দিন আইপিএসের তকমা নিয়ে নদিয়ার পুলিশ সুপারের চেয়ারে বসেছিলেন, সেদিন তাঁকে দেখে অনেকেই বলেছিলেন, এ ছেলে রাজ্য পুলিশের ডিজির পদে একদিন বসবেনই। ধাপে ধাপে সে কথাই মিলে গেল। মঙ্গলবার রাজ্য পুলিশের নির্বাহী ডিরেক্টর জেনারেল হিসাবে দায়িত্ব নিলেন মনোজ মালবীয়। এ দিন ডিজি হিসাবে কার্যকালের মেয়াদ শেষ হয় বীরেন্দ্রর।
১৯৮৬-র ব্যাচের আইপিএস অফিসার হয়ে প্রথম জীবনে নদিয়ার পুলিশ সুপারের পদে বসে মনোজ মালবীয় কীভাবে অশান্ত জেলাকে শান্ত করতে হয়, তা দেখিয়ে গিয়েছেন। তাঁর ভয়ে রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকা সে দিনের কুখ্যাত দুষ্কৃতীদের আত্মগোপন করতে হয়। এমনকী তাঁর নাম শুনলে মাতালের পা টলা বন্ধ হয়ে যেত। দুষ্কৃতীরাজ বন্ধ করতে সে দিন তিনি অবশ্য তদানীন্তন বামফ্রন্ট সরকারের পুলিশমন্ত্রীর পূর্ণ সমর্থন পেয়েছিলেন। আর পাশে পেয়েছিলেন তদানীন্তন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিনয় চক্রবর্তী ও ডেপুটি পুলিশ সুপার শুভঙ্কর ভট্টাচার্যকে। বলা যেতেই পারে তাঁদের মতো দক্ষ অফিসার পেয়েছিলেন বলেই মনোজ মালবীয় সফল হয়েছিলেন। তাই কৃষ্ণনগরে যে জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জন মানে ছিল পাড়ায় পাড়ায় মারপিট, খুন-জখম, বিনা রক্তপাতে দেবীর সেই বিসর্জন যে হতে পারে, তার সূচনা সে দিনের পুলিশবাহিনী করতে পেরেছে। যার নেতৃত্বে ছিলেন মনোজ মালবীয়। তাই নদিয়ায় আইনের শাসন কায়েম করতে আজকের মুখ্যমন্ত্রী সে সময়ে রাজ্যে বিরোধী দলে থাকলেও দুষ্কৃতীরাজ বন্ধ করতে পুলিশের কাজে বাধা দেননি। সেই মুখ্যমন্ত্রীর ‘আস্থাভাজন’ হয়ে মঙ্গলবার রাজ্য পুলিশের সর্বোচ্চ পদে বসলেন মনোজ মালবীয়।
কেন্দ্র মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজ্যকে সম্ভাব্য তিন ডিজির নামের তালিকা না পাঠানোয় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, রাজ্য পুলিশের ডিজি (সংগঠন) এবং রাজ্যের প্রবীণতম আইপিএস অফিসার মনোজ মালবীয় এখন থেকে রাজ্য পুলিশের ডিজির পদেও দায়িত্ব পালন করবেন। রাজ্যপালের নির্দেশানুসারেই এই সিদ্ধান্ত। নবান্ন সূত্রে খবর, সম্ভাব্য ডিজিদের তালিকা রাজ্যের তরফে দেড় মাস আগে পাঠানো হলেও কেন্দ্র তা থেকে সম্ভাব্য তিনজনকে বাছাই করে রাজ্যকে জানায়নি। তা হলে কি ডিজি নিয়োগ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের নতুন করে সংঘাতের আবহ তৈরি হল? রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসনিক মহলে এ নিয়ে চলছে জল্পনা।