পালাবদলের আঁতুড়ঘরে দুর্নীতি, ২০০ নেতাকে শোকজ তৃণমূলের

 

ডিজিটাল ডেস্ক, ৫ জুলাই : রাজ্যের পালাবদলের আঁতুড় ঘর বলেই চিহ্নিত নন্দীগ্রাম। আর সেখানে বাসা বেঁধেছে দুর্নীতি। তার সঙ্গে যে কোনওভাবেই আপোস করে চলবেন না তৃণমূলনেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তা তিনি স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন। বিরোধীরা তাঁর এই সিদ্ধান্তকে ‘লোকদেখানো’ বলে কটাক্ষ করলেও কাজের মাধ্যমে দলনেত্রী বুঝিয়ে দিচ্ছেন ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি তিনি বরদাস্ত করবেন না।

তাই দলের নিচুতলার জনপ্রতিনিধিরা আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সাহায্য পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা আত্মসাত্ করেছে, এই অভিযোগের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের নেত্রী আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, এ বার তাঁর একটা সিদ্ধান্তেই স্পষ্ট গরিব মানুষদের সঙ্গে কোনওরকম দুর্নীতি তিনি মেনে নেবেন না। আর এ কারণেই নন্দীগ্রাম বিধানসভা এলাকার একসঙ্গে ২০০ জন তৃণমূল নেতাকে শোকজ করল তৃণমূল নেতৃত্ব। একদিন এই নন্দীগ্রাম থেকে শক্তি সঞ্চয় করে ৩৪ বছরের বাম দুর্গে আঘাত এনেছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সেই নন্দীগ্রামে আমফানে ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূল কংগ্রেসের ২২ জন নেতাকে শোকজ রাজনৈতিভাবে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। কারণ, সামনেই বিধানসভার ভোট। তার আগে শুরু হয়েছে তৃণমূলের শুদ্ধিকরণ। সেইমতো রবিবার নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের সামসাবাদ, ভেকুটিয়া ও কেন্দামারি জলপাই পঞ্চায়েতের দলীয় প্রধানদের শোকজ করা হয়েছে। অভিযোগ, এই সমস্ত তৃণমূল-নেতারা তাঁদের পরিবারের একাধিক সদস্যের নামে ক্ষতিপূরণের টাকা পাইয়ে দিয়েছেন। ২৯ জুন জেলা প্রশাসনের তরফে ক্ষতিগ্রস্তদের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়, তাতেই ফাঁস হয় দুর্নীতির তথ্য। দলের তরফে বলা হয়েছে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য, আর তা না হলে এফআইআর করা হবে বলে সূত্রের খবর। এ প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম ব্লক তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি মেঘনাথ পাল বলেন, “নেত্রীর নির্দেশ মেনে অভিযুক্তদের কোনও ছাড় নেই। অভিযোগ প্রমাণিত হলেই কড়া পদক্ষেপ করা হবে।”
অন্যদিকে,   কালিয়াচক-২নং ব্লকের মোথাবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা টিঙ্কু রহমান বিশ্বাসকে শোকজ করা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী মৌসম বেনজির নুর সম্প্রতি শোকজের চিঠি দিয়ে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির কাছ থেকে জবাবদিহি চেয়েছেন। গত ২৪ জুন নবান্নের সর্বদল বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘ত্রাণে দলবাজির কোনও জায়গা নেই। কাউকে ছাড়া হবে না।’ সেটা যে নেহাত কথার কথা নয়, নন্দীগ্রামে একসঙ্গে ২০০ নেতাকে শোকজ থেকেই তা স্পষ্ট।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here