বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্নভঙ্গ, রোনাল্ডোর কি পথের শেষ

কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ছবি–সংগৃহীত।

ডিজিটাল ডেস্ক, ১১ ডিসেম্বর : বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে মরক্কোর কাছে ১-০ গোলে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছে পর্তুগাল। বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন ভেঙে গিয়েছে রোনাল্ডোর। এ বারই হয়তো নিজের শেষ বিশ্বকাপ খেলে ফেলেছেন তিনি। ছিটকে যাওয়ার পরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।

সময়টা ছিল টালমাটাল, ‘বিস্ফোরক’ এক সাক্ষাৎকারে প্রথমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে সর্ম্পক নষ্ট হয় রোনাল্ডোর। এর পর দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে নানা ঘটনায় কোচ ফার্নান্দো সান্তোসের সঙ্গে মতবিরোধে জড়িয়ে রোনাল্ডো প্রথমে বসেছিলেন বেঞ্চে। এ বার পর্তুগাল বাদ পড়ার পর তাঁর কেরিয়ারের এমন একটা মুহূর্ত সামনে এসে দাঁড়ালো যেখানে নিজে কিছু না বললেও, রোনাল্ডোর ভক্তদের অনেকে মনে করছেন, ‘এটা পথের শেষ’।

রোনাল্ডোর বয়স এখন ৩৭, সামনের ফেব্রুয়ারিতে ৩৮ হবে। বৈশ্বিক এই সুপারস্টারের নামের পাশে বিশ্বকাপের কোনও মেডেল থাকবে না, তা একরকম নিশ্চিত। বিশ্বকাপে মাঠে নামার আগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে রোনাল্ডোর সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। এখন তার কোনও ক্লাব নেই। ফুটবলপ্রেমীরা ইতিমধ্যে ক্লাব ফুটবলে তার শেষ দেখছেন। বিবিসি স্পোর্টের ক্রিস বেভান এক জায়গায় লিখেছেন, “পর্তুগিজরা তাঁকে ভালবাসেন, তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে জানতে চান।”

কাতার বিশ্বকাপে রোনাল্ডোর শুরুটা কিন্তু খুব খারাপ ছিল না। একটি বিতর্কিত পেনাল্টি জিতে নেন তিনি, সেখান থেকে গোল করেন, ঘানার বিপক্ষে তাঁর দল ৩-২ গোলের জয় পায়। ঘানার বিপক্ষে জয়ের পরে রোনাল্ডোর পরিস্থিতির অবনতি হতে শুরু হয়।  পরের দু’টি ম্যাচে তিনি গোল পাননি। পর্তুগালের কোচ ফার্নোন্দো সান্তোস দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে রোনাল্ডোকে বদলি করেন। তখন রোনাল্ডো ক্ষুব্ধ হন। তাঁর এই আচরণ পছন্দ হয়নি কোচের। এরপর রোনাল্ডো আর শুরুর একাদশে সুযোগ পাননি। গত ১৪ বছরে এ বারই প্রথম রোনাল্ডো কোনও বড় টুর্নামেন্টে পর্তুগালের শুরুর একাদশে ছিলেন না। তাঁর জায়গায় সুযোগ পেয়ে গনসালো রামোস হ্যাটট্রিক করে বসেন। মরক্কোর বিপক্ষেও তিনি ছিলেন বেঞ্চে। শনিবার খেলার দ্বিতীয়ার্ধে ৫১ মিনিটে রোনাল্ডো মাঠে নামেন। কিন্তু যে কারণে তাঁকে সেরাদের একজন মনে করা হয়, সেই রোনাল্ডোকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ৫০ মিনিট মাঠে ছিলেন রোনাল্ডো। এর মধ্যে মাত্র ১০বার তিনি বল পেয়েছেন। মাঠে নামার ৪০ মিনিটের মাথায় তিনি প্রথমবার কোনও শট গোলে নেন। বছরের পর বছর যে সব বিশেষ মুহূর্ত উপহার দিয়ে এসেছিলেন রোনাল্ডো, পর্তুগালের হয়ে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে, রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে, সেই রোনাল্ডোকে দেখে মনে হয়েছে–অতীত। রোনাল্ডো এখনও ফিফার আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবচেয়ে বেশি গোলের মালিক। মোট ১১৮ গোলের মালিক তিনি। এই তালিকায় আর নতুন গোল যোগ করতে পারলেন না। তাঁর দল পর্তুগালও বিদায় নিল। অন্তিম পর্যায়ে রোনাল্ডো হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন। তখন মনে হচ্ছিল তিনি ততক্ষণে বুঝে গেছেন– সময় ফুরিয়ে গিয়েছে!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here