ডিজিটাল ডেস্ক, ১৫ নভেম্বর : রাজ্য জুড়ে ১৫- র নিচে নেমেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে প্রকাশিত বুলেটিনে বলা হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১১ জন। এরমধ্যে ফের অস্বস্তিতে পড়েছেন রাজ্যবাসী। কারণ, নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সোমবার রাতে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতের বাসিন্দা মল্লিকা দাস (২৪) মারা গিয়েছেন। তাতে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কারণ ডেঙ্গি এখন বেশ দাপট দেখাচ্ছে রাজ্যে। আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে। ফলে আতঙ্কিত রাজ্যবাসী।
শুক্রবার রাজ্যের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ তুলেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ভারতী প্রবীণ পাওয়ার। তাঁর অভিযোগ, জাতীয় ভেক্টর কন্ট্রোল প্রোগ্রামের ওয়েবসাইটে গত মে মাসে শেষ তথ্য দিয়েছিল রাজ্য। সেখানে ২৩৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। এই সংখ্যাটা এখন ৫২ হাজারেরও বেশি। এই আবহে কলকাতা পুরসভা এবং স্বাস্থ্যভবন যৌথভাবে ডেঙ্গু মোকাবিলা করতে উদ্যোগী হলেও সম্প্রতি বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে মৃত্যু হয় রাজারহাটের বাসিন্দা হামিদা খাতুনের। সূত্রের খবর, এই রোগিণীর হেমারেজিক ফিভারে মৃত্যু হয়েছে। আর শনিবার পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন ৯৪৫ জন। এখন তা আরও বেড়েছে। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল হালতুর বাসিন্দা ১৪ বছরের ভার্গবি মণ্ডলের। আবার ৯ অক্টোবর ডেঙ্গুর বলি হয় হাওড়ার তিলপুকুর এলাকার বাসিন্দা ৯ বছরের শিশু। গত ৪ থেকে ৭ অক্টোবরের মধ্যে কলকাতায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ৫ জনের। এমনকী শহর কলকাতায় ডেঙ্গুর বলি হয়েছিলেন ২২ বছরের বুবাই হাজরাও। ক্রিস্টোফার রোডের বাসিন্দা তিনি এনআরএস হাসপাতালের অস্থায়ী সাফাইকর্মী ছিলেন।
এর মধ্যে বঙ্গে ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ে রাজ্য-কেন্দ্র দ্বৈরথ চলছে। পাশাপাশি খোদ কলকাতায় নাগরিক সচেতনতায় রয়েছে ঘাটতি। ফলে আগাছায় জন্ম নিচ্ছে মশার লাভা। অনেক ক্ষেত্রেই তা পুরনিগমের নজরদারি দলের চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে। পুরনিগম মানছে যে, শহরের ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়িয়েছে, পরিত্যক্ত জমি। উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতায় পরিত্যক্ত জমি, পুকুর, নর্দমার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আর তাই এ বার পরিত্যক্ত জমি নিয়েই কড়া আইন চাইছে পুরসভা। কিন্তু যাঁদের সচেতনতার অভাবে মশাদের বাড়বাড়ন্ত, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পুরনিগমের কোনও উদ্যোগ নিতে দেখা যাচ্ছে না বলে শহরবাসীদের একাংশের অভিযোগ। সূত্র বলছে, রাজ্যে ৪৬ হাজার ৯৬০টি চৌবাচ্চা রয়েছে। যার অধিকাংশই খোলা থাকে! ফলে তা খুব সহজেই মশার আঁতুরঘরে পরিণত হয়েছে।