ডিজিটাল ডেস্ক, ৮ সেপ্টেম্বর : সরকারি ভাবে বদল গেল দিল্লির রাজপথ-র নাম। প্রধানমন্ত্রী হাত ধরে রাজপথের নাম হল ‘কর্তব্যপথ’। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত সেন্ট্রাল ভিস্তা অ্যাভিনিউয়ের উদ্বোধনও করলেন প্রধানমন্ত্রী। রাজপথ হল ব্রিটিশ রাজে ভারতীয়দের দাসত্বের প্রতীক। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তাঁর বক্তব্যে এমনটাই বলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এর পাশাপাশি ইন্ডিয়া গেটে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর একটি গ্রানাইটের মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজির ভূমিকার কথা। পাশাপাশি দাবি করেন, স্বাধীনতা উত্তর ভারতে নেতাজির প্রতি যথোচিত সম্মান প্রদর্শন করেনি কোনও সরকারই। মোদী বলেন, ‘‘আজ, ইন্ডিয়া গেটে জাতীয় নেতা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর এই সুবিশাল মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হল।’’ একই সঙ্গে মোদী রাজপথ অ্যাভিনিউয়ের নাম পরিবর্তন করে কর্তব্যপথ নামকরণ করেন।
২৮০ মেট্রিক টনের ২৮ ফুট লম্বা নেতাজির মূর্তি একটি গ্রানাইট শিলাকেই কেটে তৈরি করা হয়েছে। এই মূর্তিকে শক্তিশালী ভারতের প্রতীক হিসেবেও অভিহিত করেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গেই মোদীর খোঁচা পূর্বতন সরকারের দিকেও। তিনি বলেন, ‘‘যদি স্বাধীনতার পর ভারত সুভাষবাবুর প্রদর্শিত পথে চলত, তাহলে দেশ আজ কোথায় পৌঁছে যেত। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক ভাবে, স্বাধীনতার পরই আমরা আমাদের এই মহান নেতাকে ভুলে গেলাম! তাঁর দেখানো পথ, এমনকি তাঁর সঙ্গে সম্পর্কিত চিহ্নকেও উপেক্ষা করা হল।’’
উল্লেখ্য, ব্রিটিশদের তৈরি কিংসওয়ে-র নামই স্বাধীনতার পরে রাজপথ হয়। দিল্লির সংসদ ভবন থেকে নর্থ ব্লক, সাউথ ব্লক বা কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকে পৌঁছতে হলে রাজপথ ছুঁয়েই যেতে হয়। প্রধানমন্ত্রী যুক্তি দিয়েছেন, কর্তব্যপথ ধরে সাংসদরা সংসদে গেলে বা সরকারি দফতরে গেলে কর্তব্যবোধ থেকে কাজ করতে অনুপ্রাণিত হবেন। প্রধানমন্ত্রীর দাবি, গোলামির প্রতীক রাজপথ ইতিহাস থেকে মুছে গেল। শুধু তার উপরের সাজসজ্জা নয়, আত্মাও বদলে গেল। আন্দামানের দ্বীপের নাম বদলে, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের ঠিকানা রেস কোর্স রোড থেকে বদলে লোক কল্যাণ মার্গ করে, ‘বিটিং দ্য রিট্রিট’ অনুষ্ঠানে ভারতীয় বাদ্যযন্ত্র ও দেশভক্তি গানের সুর বাজিয়ে, নৌসেনার পতাকার নকশা বদলে তিনি গোলামির চিহ্ন মুছে ফেলারই কাজ করেছেন বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দিয়েছেন। বিরোধী নেতাদের কটাক্ষ, মোদীকে দেখে মনে হচ্ছে, তিনিই সবেমাত্র দেশ স্বাধীন করে গোলামির চিহ্ন মোছার কাজ শুরু করেছেন! ২৩ জানুয়ারির বদলে কেন ৮ সেপ্টেম্বর ইন্ডিয়া গেটের সামনে নেতাজির মূর্তি উদ্বোধন হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কংগ্রেসের দাবি, রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ থেকে নজর ঘোরাতেই এই দিনটি বেছে নেওয়া।